নড়াইল প্রতিনিধিঃনড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে নার্স কর্তৃক জুতা পেটার শিকার হয়েছে রোগী ও তার স্বজনরা,উল্টোপাল্টা মারধরের ফলে রুগীর শাশুড়ির কানের লতি ছিড়ে গেছে৷হাসপাতাল থেকে কানে তিনটি শিলাই দিয়ে তাঁকে সদর থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
জানা গেছে, গত ৮ অক্টোবর নড়াইল লোহাগড়া উপজেলার নলদি ইউনিয়নের বারইপাড়া গ্রামের সুমাইয়া বেগম পেটে ব্যাথা জনিত রোগে চিকিৎসা নিতে আসেন সদর হাসপাতালে। ১০অক্টোবর রোগীকে গাইনি ওয়ার্ডে রেফার্ড করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আজ (১১ অক্টোবর) গাইনি ওয়ার্ডে গিয়ে পেটে ব্যাথা বেড়ে গেলে রোগীর স্বামী কর্তব্যরত নার্সকে খুজতে থাকেন। খোজাখুজির এক পর্যায়ে দেখেন কর্তব্যরত নার্স বিউটি পারভিন লেবার রুমে ফ্যান মেরামত কাজে ব্যাস্ত রয়েছে। আকুতি মিনতি করে রোগীর স্বামী ইমরান নার্সকে আসতে বললে রেগে গিয়ে তাঁদের মধ্যে কথাকাটা কাটি হয়,এক পর্যায়ে নার্স বিউটি পারভীন ক্ষিপ্ত হয়ে পায়ের জুতা খুলে রোগীর স্বামী ইমরান কে মারপিট করেন।
চেঁচামেচি শুনে ঘটনা স্থলে ছুটে আসেন, সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাক্তার আসাদুজ্জামান মুন্সী(টনি), ডাক্তার সুব্রত কুমার বিশ্বাস সহ হাসপাতালেরে অন্যান্য নার্স, আউট সোর্সের কর্মী, ওয়ার্ড বয়রা।
এসময় সকলে একত্রিত হয়ে একটি রুমে আটকিয়ে রোগীর স্বজনদের বেধড়ক মারপিট করেন। মারপিটের এক পর্যায়ে রিমা বেগম নামে রুগীর শাশুড়ির কানের লতি ছিড়ে যায়।
বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নার্স বিউটি পারভিনের নেতৃত্বে হাসপাতালের কর্তব্যরত ১০ থেকে ১২ জন নার্স সরকারি এ্যামবুলেন্স ব্যাবহার করে সদর থানায় এসে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
চিকিৎসারত অবস্থায় রুগী সুমাইয়া জানান, আমার প্রচন্ড পেটে ব্যাথা শুরু হলে আমার স্বামী নার্সকে খুজতে গেলে দেখেন নার্স ফ্যান মেরামত করছে। তখন আমার স্বামী নার্সকে আসতে বললে তিনি বলেন, দেখছ না কাজ করছি। তখন আমার স্বামী বলেন আপনার কি ফ্যান মেরামত করার কাজ। কথা শুনে নার্স রেগে গিয়ে পায়ের জুতা খুলে আমার স্বামীকে মারপিট করেন। একপর্যায়ে হাসপাতালের সকলে একত্রিত হয়ে আমার সাথে আসা স্বজনদের উপর হামলা করে লোহার রড দিয়ে মারপিট করে।মারপিটে আমার শাশুড়ির কানের লতি ছিড়ে গেছে।রক্তে তার সারা শরীর ভিজে গেলেও তাকে কেউ চিকিৎসা দেয়নি, পরবর্তীতে সাংবাদিক ও আমার আত্নীয় স্বজনরা এসে তাকে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে চিকিৎসা দেয়,কানে তিনটি সেলাই লেগেছে, এর পরই সদর থানা পুলিশ আমার শাশুড়িকে থানায় নিয়ে গেছে।
রুগী সুমাইয়ার পিতা
সালাম শেখ বলেন, বিনা কারনে উত্তেজিত হয়ে ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ড বয়, আউটসোর্সিংয়ের লোক একত্রিত হয়ে আামদের উপর হামলা চালায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নার্স বিউটি পারভিন বলেন, রোগীর স্বজনেরা আমার উপর হামলা করেছে। এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাক্তার আসাদুজ্জামান মুন্সী(টনি)
বলেন, রোগীর স্বজনেরা হামলা করেছে।
সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক, প্রেমানন্দ মন্ডল সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান জানান,সদর হাসপাতালের আজকের ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি, মামলা প্রক্রিয়াধীন, পরবর্তীতে বিস্তারিত জানাবো।