মোঃ জুলহাস উদ্দিন হিরো, শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বিস্তির্ণ ফসলের মাঠে হলুদের সমারোহ। বর্তমানে সরিষার মাঠে কৃষকের স্বপ্ন খেলা করছে। লাভের আশায় কৃষকরা এখন ঝুঁকে পড়ছেন সরিষা চাষে। তাই এবছর সরিষা চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, নালিতাবাড়ীতে তৈল জাতীয় ফসল উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষে সরকারী নির্দেশনায় উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৫ হাজার ৫০০শ কৃষককে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। প্রণোদনা ছাড়াও নিজ উদ্যোগে এ বছর ১ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করেছেন অনেকে। যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ। এরমধ্যে বারি-১৪ জাত ও দেশী জাতের সরিষা রয়েছে। ইতোমধ্যে হলুদে ছেঁয়ে গেছে সরিষা ক্ষেত। মাঠে মাঠে মৌ মৌ গন্ধে মধু সংগ্রহ করছে মৌমাছিরা। এমাসেই নতুন সরিষা উত্তোলণের পর আবার তারা একই জমিতে বোরো ধান চাষ করবেন।
কৃষকরা একই জমিতে আগাম জাতের আমন ধান কাটার পর সরিষার আবাদ করেছেন। সরিষা ঘরে তুলার পর আবার বোরো আবাদে ব্যস্ত হবেন। সরিষার জমিতে শতকরা ৩০% রাসায়নিক সার কম লাগায় বোরো আবাদে কৃষকের খরচ কম হবে। এছাড়া সরিষা তেলের নিজ পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে আর্থিক লাভবান হবেন কৃষকরা। তাই ক্রমেই সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
উপজেলার মরিচপুরান ইউনিয়নে এবার বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। ওই ইউনিয়নের টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের পাশের মাঠে দিগন্তজুড়ে সরিষার মাঠ। এমাঠে একসাথে ১শ একর জমিতে সরিষা বুনেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন বেশি হবে। চলতি মৌসুমে উপজেলা কৃষি অফিস দৈনিক খোঁজখবর নিচ্ছেন ও সরিষা চাষিদের সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছেন।
ওই এলাকার কৃষক জিয়াউল মিয়া জানান, আমি এবার ৪০ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনার বারি- ১৪ জাতের সরিষার বীজ ও সার পেয়েছিলাম। তাদের পরামর্শে সরিষা ক্ষেতের পরিচর্যা করছি। আবাদ ভালো হয়েছে। আশা করছি ভালো ফলন পাবো।
একই এলাকার কৃষানী ফাতেমা বেগম বলেন, তার ১ একর জমিতে বারি- ১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছেন। এবার অন্য বছরের চেয়ে আবাদ সুন্দর হয়েছে। তাই বাম্পার ফলন হতে পারে।
এছাড়া, ওই এলাকার কৃষক আনিছ মিয়া ৬ একর ও আঃ মজিদ ৪০ শতাংশ জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। এখন সারা গ্রাম যেন হলুদে ছেঁয়ে গেছে। এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করতে উৎসুক নারী-পুরুষ ছুটে যাচ্ছেন সরিষা ক্ষেতে।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর কবির বলেন, কৃষিমন্ত্রীর নির্দেশনা মতে আগামী ৩ বছরের মধ্যে সরিষার আবাদ ৪০% বৃদ্ধি করতে হবে। এ লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ফলে গত বছরের ৭৫৮ হেক্টরের স্থলে বেড়ে এ বছর ১ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রণোদনার আওতায় উপজেলায় ১০০ একরের বেশি এই মাঠে নতুনভাবে সরিষার চাষ হয়েছে। অনেক সরিষা ক্ষেত পরিদর্শন করেছি। ফলন বেশি হবে, কৃষকরা ন্যায্য মুল্য পাবে। নালিতাবাড়ীর সরিষা চাষীরা দেশে ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
সংবাদদাতা, মোঃ জুলহাস উদ্দিন হিরো,
শেরপুর প্রতিনিধু,