মহম্মদপুর প্রতিনিধি।
মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার রাজাপুর ইউপির কলমধারী গ্রামে ফকিরের ফিকিরী ধরা পড়ার ঘটনা ঘটেছে।ফকির জানেন না তেমন কেনো লেখা পড়া,পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত করেছে লেখাপড়া।কলমধারী গ্রামের লুৎফর রহমানের পরিবারের একজন নারী সদস্য দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ্য (শরীরে কাঁপনী)অনেক ডাক্তার কবিরাজ দেখিয়ে ভাল হয়নি তার রোগ,নহাটা এলাকার লেদ মিস্ত্রি মিজান নামের এক লোকের দেওয়া তথ্যে স্বরণাপন্ন হয় পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার নোওয়াপাড়া ইউপির সীতারামপুর গ্রামের চন্নু ফকিরের।
ঘাড়ে জ্বীন হাজির করে রোগী দেখে বলে তাকে নষ্ট করা হয়েছে,নষ্ট করার জন্য বাড়ীতে পুতে রাখা হয়েছে বিভিন্ন জিনিস,সেটি নষ্ট বা উদ্ধার করতে হবে,ব্লাড ক্যালেকশনের মানুষ করেছে এ কাজ,দেরব,ভাসুর,জা,ননদ, শাশুড়ী এ কাজ করেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জানানো হয় এরা কেউ না,বংশের লোকে করেছে এ কাজ।এরপর একদিন ফকির চন্নুকে এনে বাড়ীর দুই স্থান থেকে উঠানো হয় নষ্ট করার উদ্দেশ্য পুতে রাখা সেই সকল জিনিসপত্র,সেদিনও তার কাছে জানতে চাওয়া হয় কে করলো এ কাজ?জবাবে চন্নু বললো বংশের লোক করেছে এ কাজ,একটি আমল শিখিয়ে দেওয়া হবে যেটা করলে তারা নিজেরাই জানতে পারবে কে করেছে কাজটি।এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিলো ফকিরের কাজ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া শেষে কিছু টাকা পয়সাও নেওয়া হয় রোগীও বেশ সুস্থ্য কিন্তু বিপত্তি ঘটে ফকির চন্নু বাড়ীতে যেয়ে কিছুদিন পর জানায় এ কাজ করেছে রোগীর শাশুড়ী,শুরু হয় পারিবারিক দ্বন্দ্ব চরমভাবে অশান্তিতে পড়ে যায় পরিবারটি।
ফকির কতটা সঠিক কথা বলেছে সেটা যাচাই করার জন্য লুৎফর একজন সুস্থ্য মহিলাকে পরিচয় গোপন করে পাঠানো হয় চন্নু ফকিরের কাছে,চন্নু যথারীতি আসরে বসে ঘাড়ে জ্বীন হাজির করে বলে দেন তাকেও নষ্ট করা হয়েছে,তার বাড়ীতেও বিভিন্ন জিনিসপত্র পুতে রাখা হয়েছে।এ কথার পর ২৩ জানুয়ারি ফকির চন্নুকে ঐ মহিলার বাড়ী না নিয়ে লুৎফারের এক বোনের বাড়ীতে নিয়ে যাওয়া হয়,সেখানে আগের নিয়মানুযায়ী চন্নু তিন জনের প্রস্রাব দিতে বললে সেটা না দিয়ে টিউবওয়েলের পানি দেওয়া হয়,এরপর হাত চালান দিয়ে বের করা হয় সেই জিনিসপত্র যেটা চন্নু আগে থেকে জোগাড় করে কাছে রাখতো।এরপর সেখানে লুৎফর ও তার অন্য ভাইয়েরা যেয়ে সেখানে পৌছালে ঘাবড়ে যায় ফকির চন্নু এবং অকপটে স্বীকার করেন তার এই ফিকিরীমির কথা।এরপর চন্নুর বাড়ীতে খবর দেওয়া হলে তার ভাই মন্নু ও ভগ্নিপতি এবং নিকট আত্মীয়রা ২৪ তারিখ বুধবার রাজাপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিতে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষ তারা নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে চন্নু তার অপরাধের কথা স্বীকার করে বলেন,আমি ফাইভ পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি,ঘাড়ে জ্বীন আসা,ও জিনিসপত্র উদ্ধার সব-ই আমার ফিকরেমী,আমার কয়েকটি সূরা মুখস্থ আছে যা দিয়ে আমি ঝাড়ফুঁক করি। এ বিষয়ে রাজাপুর ইউপির চেয়ারম্যান মোঃশাকিরুল ইসলাম শাকিল বলেন,ফকরেমীর নামে ফিকরেমী করা এক প্রতারককে এলাকাবাসী আটক করে,এরপর তাদের পরিবারের লোকজনকে খবর দিয়ে সে আর কখনও এই কাজ মর্মে প্রতিশ্রুতি দিলে এলাকাবাসী ও আমি থেকে ফকির চন্নু ও তার সহকারী রজব আলীকে তাদের পরিবারের লোকজনের হাতে বুঝিয়ে দিয়েছি।
Leave a Reply