নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নজরুল ইসলাম নাজু, বাড়ি বরিশাল বিভাগে । চাকরি সূত্রে নড়াইলে আসেন।বিভিন্ন ডাক্তারের চেম্বারে ঘুরে ঘুরে ঔষধ বিক্রি করতে করতে একসময় চাকরি ছেড়ে দিয়ে নড়াইল পৌরসভার আশ্রম রোডে নিজেই ঔষধের দোকান খুলে বসেন। সেখানেই ড্রাগ লাইসেন্স করে ব্যবসা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সেখান থেকে দোকান খালি পেয়ে চলে আসেন রুপগঞ্জ কালীবাড়ি রোডে।আর এখানে এসেই অভিজ্ঞ ডাক্তার সেজে চেম্বার খুলে দোকানের পেছনে মিনি হাসপাতাল খুলে অপচিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
এম বি বি এস, বিডি এস ডিগ্রী ছাড়া নামের আগে ডাক্তার লেখা, প্রেসক্রিপশন ও রোগ নির্ণয়ের জন্য টেষ্ট দেওয়ার সরকারি বিধি নিষেধ থাকলেও নজরুল ইসলাম নাজু তা থোরাই কেয়ার করেন।
গত ২২ ই জানুয়ারী নড়াইল পৌরসভার কুড়িগ্রামের মশিয়ার রহমানের বাড়ির মেসে ভাড়া থাকা আবিদা(১৮) নামের একটি মেয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তার রুমমেটরা কালিবাড়ি রোডের নজরুল ইসালম নাজুর মালিকানাধীন সেতু ড্রাগ হাউজে নিয়ে আসেন।
সেখানে ফার্মেসী মালিক তাকে সদর হাসপাতালে না পাঠিয়ে নিজেই চিকিৎসা দিতে শুরু করেন। তিনি অসুস্থ আবিদাকে তার ছাপানো প্রেসক্রিপশন প্যাডে সতেরশো চল্লিশ টাকার বিভিন্ন ধরনের ঔষধ দেন, এবং আর বি এস,কোলেষ্টরেল ও ইসিজির মত জটিল টেস্ট করার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালের সামনের মেডিল্যাবে পাঠিয়ে দেন।সেখান থেকে টেস্ট রেজাল্ট নিয়ে আসলে সে সকল টেস্টের ফলাফল নজরুল ইসলাম নাজুই দেখে সব ঠিক আছে বলে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
ভুক্তভোগী আবিদা পরের দিন টেস্ট রিপোর্ট একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক কে দেখালে ভূয়া ডাক্তার নাজুর দেওয়া ঔষধ সেবন করতে নিষেধ করেন।
অভিজ্ঞ ডাক্তারের কথা মত মেয়েটি ঔষধ ফেরত দিতে গেলে প্রথমে নাজু ঔষধ ফেরত নিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। মেয়েটি অনেকবার অনুরোধ করলে নাজু রাতের বেলা গিয়ে তার ফার্মেসী থেকে টাকা ফেরত নিয়ে আসতে বলেন। রাতে তার ফার্মেসীতে যেতে পারবেনা বলে মেয়েটি বেড়িয়ে যায়।পথে বাড়ির মালিক মশিয়ার রহমানের সাথে দেখা হলে বিষয়টি তাকে খুলে বলে।মশিয়ার রহমান এসে মেয়েটির সাথে কি হয়েছে জানতে চাইলে ফার্মেসী মালিক নাজু ময়িয়ার রহমানের সাথেও খারাপ আচরন করেন।
অভিযোগের বিষয়ে ফার্মেসি মালিক নজরুল ইসলাম নাজুর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, মেয়েটি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, আমি তার পরিবারের লোকজনের সাথে আলাপ করে তার চিকিৎসা করেছি।
এই বিষয় নিয়ে মশিয়ার রহমান আমার বিরুদ্ধে ঔষধ বিক্রয় সমিতির সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।
সভাপতি আমাকে ডেকে ঔষধ ও টেস্ট বাবদ দুই হাজার পাঁচশ টাকা ফেরত দিতে বলেছে। আমি টাকা সভাপতির কাছে ফেরত দিয়েছি।
প্রেসক্রিপশন ও টেস্ট করতে দেওয়ার এখতিয়ার তাঁর আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি সরকার ও নড়াইল ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির কাছে জবাব দেব।
দির্ঘদিন ফার্মাসিষ্ট হয়ে
ভূয়া ডাক্তার সেজে রুগীদের সাথে প্রতারনা করলেও তার বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। সেতু ড্রাগ হাউজের মালিক ভূয়া ডাক্তার নজরুল ইসলাম নাজুর বিরুদ্ধে প্রশাসন দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবে এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।
Leave a Reply