মোঃ জুলহাস উদ্দিন হিরো, শেরপুর প্রতিনিধি :
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইডিপি) অন্তর্ভুক্ত স্ট্রেংদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস স্কিম-এর আওতায় পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
১৪ মার্চ মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্টিত হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোস্তফা কামাল এর
সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ফারুক আল মাসুদ । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আতিকুর রহমান তালুকদা, সরকারি আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মো. শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির মনিটরিং অফিসার মোহাম্মদ মাসুম বিল্লার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আতিকুর রহমান তালুকদার। তিনি পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরেন। এছাড়াও পরিপূর্ণ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ওঠার জন্য বই পড়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার পিন্টু কুমার ২০২৩ সালের কর্মসূচি বাস্তবায়ন কর্মপরিকল্পনা সভায় উপস্থাপন করেন।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সরকারি আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি ছাত্রছাত্রীদের বইমুখী করে তুলবে এবং প্রযুক্তির অপব্যবহার থেকে মুক্ত হবে। সুন্দর সৃজনশীল সমাজ গঠনে এই প্রজন্ম পরবর্তীতে ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফারুক আল মাসুদ বলেন, কর্মসূচির দ্বারা শিক্ষার্থীদের বই পড়ার পাশাপাশি পাঠ দক্ষতা বাড়বে। ঝিনাইগাতী উপজেলার শিক্ষকদের প্রতি এই কর্মশালা পরিচালনা করার জন্য আন্তরিক আহবান জানান। তিনি এই উপজেলায় কর্মসূচি পরিচালনা করার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলেও আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি আরো বলেন, উন্নত বিশ্বে নেতৃত্ব দিবে যে প্রজন্ম তাদের গড়ে তুলতে আমাদের পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’ সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। বই পড়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কল্পনাশক্তি বাড়ে, স্বাধীনচেতা হয়ে উঠে এবং তাদের ন্যায়- অন্যায়, বিবেকবোধ জাগ্রত হয়, তারা মানবিক বোধ সম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠতে পারে ।
কর্মশালার মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র কর্মপরিকল্পনা, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন,
পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির টিম ম্যানেজার মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার অন্যতম উদ্দেশ্য মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে তাদের মন এবং বয়স উপযোগী বই পড়ায় আগ্রহী করে তোলা। তিনি আরো জানান, কর্মসূচি পরিচালনার জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন, বইপড়া শেষে মূল্যায়নের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি টেকসই ও কার্যকর করার লক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।
কর্মশালায় সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বই হলো সেই মাধ্যম যা শিক্ষার্থীদের সফল মানুষ হতে এবং বড়ো স্বপ্নের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে সাহায্য করে। উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিনি সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
কর্মশালায় উপস্থিত সকলকে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির একটি করে নোট বই, কলম, অনুষ্ঠানসূচি, ২০২৩ সালের কার্যক্রমের কর্ম পরিকল্পনা ও পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মুদ্রিত কপি প্রদান করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে ঝিনাইগাতী উপজেলার স্কিমভূক্ত মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহকারী শিক্ষক (গ্রন্থগার ও তথ্য বিজ্ঞান) এবং অন্যান্য সহকারী শিক্ষকবৃন্দ এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, দেশের ৬৪ জেলার ৩শত উপজেলার ১৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন করছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।
Leave a Reply