নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের চাঁচড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় মাদ্রাসা ও এতিমখানার আড়ালে মাদক বেচাকেনা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাঁধা দেয়ায় মো: সেলিম মোল্যা (৩৪) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে জখম করেছে । কোপানোর ঘটনায় চাঁচড়া দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা জিয়াউর রহমানকে (৪৫) আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী সেলিম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চাঁচড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা জিয়াউর রহমান একজন মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। এলাকার যুব সমাজ ও অন্য এলাকার মাদকসেবীদের কাছে জিয়াউর মাদক বিক্রি করে থাকে । মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করার কারণে জিয়াউর তার প্রতিবেশি সেলিমের উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং জীবন নাশের হুমকি দেয়।গত ৫মে দিনগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে সেলিম প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির সামনে রাস্তায় জিয়াউরসহ অচেনা দুইব্যক্তিকে দেখতে পান।তখন সেলিম অচেনা লোকসহ জিয়াউরকে এতরাত্রে বাইরে থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে জিয়াউর ক্ষিপ্ত হয়।মাদক বেচাকেনার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সেলিম এলাকার পরিবেশ নষ্ট না করার জন্য জিয়াউরকে অনুরোধ করেন।তখন জিয়াউর ক্ষিপ্ত হয়ে কোমরে থাকা ধারালো হাসুয়া দা দিয়ে সেলিমের মাথায় কোপ মারে। তিনি (সেলিম) বাম হাত দিয়ে কোপ ঠেকাতে গেলে হাতের পাঞ্জা কেটে গভীর ক্ষত হয়।এছাড়া কাঁধ ও গলায় কোপ দিলে গুরুতর জখম হন সেলিম।তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ও নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।ঘটনা উল্লেখ করে সেলিম মোল্যা বাদী হয়ে গত ৭ মে নড়াইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা নাজমুল মীর,আতিক হাসান জানান,জিয়াউর একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। নামমাত্র চাঁচড়া হাফেজী মাদ্রাসা ও এতিমখানা খুলে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ মাদক ব্যবসা চালাচ্ছেন তিনি। মাদ্রাসা এতিমখানার নামে নড়াইল জেলা পরিষদ থেকে ১ লক্ষ টাকা অনুদান এনে ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল কিনেছে। এতিমখানা মাদ্রাসার ছেলেমেয়েদের প্রতিদিন সকালে বিভিন্ন এলাকায় আদাইতে পাঠায়।।
একই কথা জানালেন আমিরোন নেসা (৫৫), রুপালী বেগম (২৮) ও সোনালী খানম (২৪)।তারা জানান,মাদ্রাসা ও এতিমখানায় মাত্র ৪-৫ ছাত্র আছে।
সে এই কতিপয় শিশু বাচ্চাদের যোগাড় করে নামেমাত্র একটা হাফেজী মাদ্রাস ও এতিমখানা খোলো। সেখানে কোন পরিচালনা কমিটি নাই। ব্যক্তিগত প্রতি কমিটি পরিচালনা করে। সেখানে কোন পড়া লেখা হয়না। সে শিশু বাচ্চাদের দিয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রাম মহল্লায় ধাম, চাউল, নগদ টাকা আদায় করা তার পেশা। যা শিশুশ্রম আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নূন্যতম ছাত্র না থাকলেও মাদ্রাসা ও এতিমখানার নাম ব্যবহার করে তিনি সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নগদ টাকাসহ অন্যান্য অনুদান গ্রহণ করে তা পকেটস্থ করছেন।প্রশাসনসহ সাধারন মানুষের চোখ ফাঁকি দিতে মাদ্রাসার আড়ালে তিনি অবাধে মাদকের বেচাকেনা চালিয়ে যাচ্ছেন।স্থানীয় লোকজন ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না।জিয়াউরের অবৈধ মাদকের বেচাকেনা বন্ধসহ অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
মামলা দায়েরের পর জিয়াউর পলাতক থাকায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সাজেদুল ইসলাম জানান, আসামি জিয়াউরকে গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে।আশা করছি তাকে দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভবপর হবে।মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করে ওসি বলেন,মাদক বেচাকেনার সাথে যেই জড়িত থাকুক না কেন তাকে ছাড় দেয়া হবে না।তাকে আইনের আওতায় আনা হবেই।###