সোহেল রানা,রাজশাহী,প্রতিনিধি:
রাজশাহীর তানোরে দুইটি কথিত এনজিওর ফাঁদে পড়ে চারজন দরিদ্র নারী-পুরুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তাদের অভিযোগ—ঋণগ্রহণের সময় জমা দেওয়া ফাঁকা স্ট্যাম্প ও চেক ব্যবহার করে ঋণ পরিশোধের পরও আদালতে মোট ৩৪ লাখ টাকার চেক প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক ভুক্তভোগী ফরিদা বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তানোর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মশিউর রহমান ও সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর পলি বেগম ‘পল্লী সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিঃ’ এবং ‘ফেমাস বিজনেস ডেভেলপমেন্ট লিঃ (এফবিডিএল)’ নামে দুটি ভুয়া এনজিও পরিচালনা করছেন। তারা দরিদ্রদের কাছ থেকে ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে উচ্চ সুদে ঋণ দিয়ে যাচ্ছেন। ঋণ পরিশোধের পর চেক ফেরত না দিয়ে বরং তার ওপর অতিরিক্ত অঙ্ক বসিয়ে মামলা করছেন বলে অভিযোগ।
ফরিদা বেগম জানান, তিনি ২০২১ সালের ১৭ আগস্ট রূপালী ব্যাংক তানোর শাখা থেকে ৬৮ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। সাপ্তাহিক কিস্তির মাধ্যমে ২০২২ সালের ২২ মে পর্যন্ত সুদসহ মোট ১ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু চেক ফেরত না দিয়ে তার নামে আদালতে ১১ লাখ ৩ হাজার ৭৮০ টাকার মামলা দায়ের করা হয়।
ফরিদা বেগমের ভাই শফিকুল ইসলাম জানান, তিনিও একই কায়দায় ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন এবং পরে তা পরিশোধও করেন। কিন্তু তার নামেও ১৭ লাখ টাকার মামলা দায়ের হয়, যার ফলে তাকে ১৫ দিন কারাবরণ করতে হয়। এছাড়া ফরিদার মা রাবিয়া বেগম ও কন্যা তানিয়া—তাদের নামেও যথাক্রমে ২ লাখ ৬০ হাজার ও ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার চেক মামলা হয়েছে।
এ নিয়ে ফরিদা বেগম ও তার পরিবারের চার সদস্যের নামে মোট ৩৪ লাখ টাকার চেক মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মামলা থেকে রেহাই পেতে গেলে সাবেক কাউন্সিলরদ্বয় মশিউর ও পলি নানা ভয়ভীতি ও হয়রানি করছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মশিউর রহমান ও পলি বেগম বলেন, “আমরা টাকা পাবো বলেই মামলা করেছি। অভিযোগ করে কেউ পার পাবে না।” সাংবাদিকদের একাধিক প্রশ্ন তারা এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিয়াকত সালমান বলেন, “অভিযোগের তদন্তে সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ হোসেন খান জানান, “উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে আপোষের চেষ্টা চলছে।”
Leave a Reply