পিরোজপুর প্রতিনিধি:
পিরোজপুরের নাজিরপুরে শাফিকুল ইসলাম সাফিক নামে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা না পেয়ে দিনদুপুরে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান লুট ও দখলের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শাফিকুল ইসলাম সাফিক উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক।
এ ঘটনায় মো. মোস্তফা আলী সেখ নামের এক ব্যক্তি গত ২৯ এপ্রিল পুলিশ সদর দপ্তরসহ বেশ কয়েকটি সরকারি দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন এবং গত ১৬ জুলাই সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. মাহতাব হোসাইন সেখ নামে আরেক ব্যক্তি পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপার বরাবর আরেকটি লিখিত অভিযোগ দেন।
মোস্তফা আলী সেখ ও মাহতাব হোসাইন সেখের বাড়ি নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে। তারা সম্পর্কে ভাই।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী মোঃ মোস্তফা আলী সেখ সৌদিআরব হতে দেশে ফিরে ব্যবসা বানিজ্যের জন্য ১৫ লক্ষ টাকা নিয়ে তার পিতার ৫০ থেকে ৬০ বছরের ভোগদখলকৃত সম্পত্তিতে ২০১২ সালে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করে সেখানে রড এবং সিমেন্টের ব্যবসা শুরু করে। ব্যবসা শুরুর ২ থেকে ৩ মাসের মাথায় স্থানীয় মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম তার কাছে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম তার ছোট ভাই শেখমাটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাফিকুল ইসলাম সাফিক ভুক্তভোগীর চাচাত ভাই এসকেন্দার আলী সেখকে সঙ্গে নিয়ে গত ২০ মার্চ সকাল দশটার দিকে স্থানীয় ২৫ থেকে ৩০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে ভুক্তভোগীদের সিসিটিভি যুক্ত দোকানের পিছন দিক থেকে দেয়াল ভেঙ্গে সিসিটিভিসহ রড, সিমেন্ট, নগদ ১ লক্ষ টাকা এবং লেপ তোষকসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায় এসময় তারা লেপ তোষকে আগুন দিয়ে আনন্দফুর্তি করে।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে মো. মোস্তফা আলী সেখ বলেন, শাফিকুল ইসলাম সাফিক ও তার ভাই মোঃ মোজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জন লোক আমার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান লুট করে নিয়ে গেছে। থানায় অভিযোগ দিয়ে কোনো লাভ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে পুলিশ সদর দপ্তর ও জেলা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দায়ের করেছি।
চাঁদা দাবি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান লুটের অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা শাফিকুল ইসলাম সাফিক বলেন, আমি রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণে, আমার বিরুদ্ধে আমার প্রতিপক্ষরা বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন, আমি যতদূর জানি ওই জায়গার মালিক মোস্তফার চাচাতো ভাই এসকেন্দার আলীর ওটা তাদের পারিবারিক বিরোধ ওখানে আমাকে কেন জড়ানো হচ্ছে আমি জানিনা।
এ বিষয়ে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ আবু নাসের বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
এদিকে অভিযোগটি নজরে আনা হলে নাজিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান দুলাল বলেন, এ ব্যাপারে কেউ আমাদের কাছে কোন অভিযোগ করেনি অভিযোগ করলে বিষয়টা খতিয়ে দেখে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বিএনপি নেতা শাফিকুল ইসলাম সাফিকের বিরুদ্ধে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ব্যক্তি চাঁদা দাবি সহ বেশ কিছু অভিযোগ করেন।