বেরোবি প্রতিনিধি
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের (১৭ ব্যাচ) র্যাগিং করার অভিযোগ উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন ওই শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, আমরা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর এর সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক প্রথম বর্ষ (১৭ তম ব্যাচ) এর শিক্ষার্থীরা। দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সম্প্রতি আমাদের ব্যাচের উপর কিছু ইমিডিয়েট সিনিয়র শিক্ষার্থী ধারাবাহিকভাবে অযৌক্তিক বিধি-নির্ধ্বে আরোপ করছে এবং মানসিকভাবে হয়রানি করছে। এ। ধরনের আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধি, শিক্ষার্থী নীতিমালা এবং বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৫০৬ ও ৫০৯ ধারার (হুমকি ও হয়রানি) পরিপন্থি।
অভিযোগ পত্রে অভিযোগের মূল বিষয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়,
১. জোরপূর্বক ফুল হাতা শার্ট পরিধান করতে বাধ্য করা এবং হাতা ভাজ করা নিষিদ্ধ করা।
২. রাতের বেলা ক্যাম্পাসে ডেকে "ম্যানার" শেখানোর নামে মানসিক চাপ ও আতঙ্ক সৃষ্টি।
৩. অনাকাঙ্ক্ষিত ও অননুমোদিত শৃঙ্খলজনিত কার্যক্রম পরিচালনা, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের বাহিভূত।
এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু আমাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও মর্যাদা হরণের শামিল-ই নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-সুলভ পরিবেশকে নষ্ট করছে। ইতিহাসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় অংশ জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহিদ, প্রাক্তন শিক্ষার্থী শহিদ আবু সাঈদ ভাই- যিনি অন্যায়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন। আজ সেই একই ক্যাম্পাসে, অন্যায়ের শিকার হচ্ছেন নবীন শিক্ষার্থীরা এটি গভীর ভাবে দুঃখজনক এবং শহিদ আবু সাঈদ ভাইয়ের ত্যাগকে লাঞ্ছিত করে।
জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে অভিযোগ পত্রে আরও উল্লেখ করা,
১. ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন।
২. দায়ী ইমিডিয়েট সিনিয়র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
৩. ক্যাম্পাসে নবীন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও স্বাধীন চলাফেরা নিশ্চয়তা প্রদান।
৪. ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে লিখিত নির্দেশনা জারি।
আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মকানুন ও শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং চাই একটি নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ। আপনার স্যার! আপনার তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা ছাড়া এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, একটি অভিযোগ পত্র আমি হাতে পাওয়ার পর অভিযুক্ত এবং ওই বিভাগের চেয়ারম্যান কে ডেকে কথা বলি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা তখন র্যাগিংয়ের বিষয়টি স্বীকারও করেছে। তখন তাদেরকে বিষয়টি শৃঙ্খলা বোর্ডের তোলা হবে বলে জানাই। এরপর আমি নামাজে যাই। পরে শুনি ১৬ ব্যাচের একটি ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছেলেটি এখন সুস্থ আছে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, র্যাগিংয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম হতে সাময়িক/স্থায়ী বহিষ্কার, আবাসিক হল হতে সাময়িক/স্থায়ী বহিষ্কার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন প্রয়োগ অথবা অবস্থা বিবেচনায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বরাবর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানানো হয়।