মোহাম্মদ মাসুদ
চট্টগ্রামে জশনে জুলুসে অংশ নিয়ে আহত হয়ে একাধিক মৃত্যুর খবর এই প্রথম। মৃত্যুর শোকে শোকাহত জুলুস ময়দানের অংশগ্রহণকারী জনতা ও পরিবার স্বজন । অজ্ঞাত পরিচয় মৃত ব্যক্তির এখনো পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায়নি। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে আয়োজিত ধর্মীয় শোভাযাত্রা জশনে জুলুসে অংশ নিয়ে এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি সহ আরো একজন মারা গেছেন ।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে নগরের পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুর মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া ভিড়ের মধ্যে চাপা পড়ে আহত দু’জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে একজন মারা যায় পরবর্তীতে আরেকজনের একটু নিশ্চিত করা হয়। তাদের মধ্যে একজনের নাম মাহফুজ (৩৫) এবং অন্যজনের নাম জানা যায়নি।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশেক বলেন, হাসপাতালে আনয়নকারীরা জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী শোভাযাত্রায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে নিচে পড়ে যান। দ্রুত তাকে হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া আহত আরও দু’জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আহত অজ্ঞাত ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে চমেক হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এসআই নুরুল আলম আশেক বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে জুলুস উপলক্ষ্যে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে লাখো মানুষ নগরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুরাদপুর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সমবেত হন। সকাল ৯টায় আলমগীর খানকাহ থেকে শুরু হওয়া এই শোভাযাত্রা নগরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। লাখো মানুষের অংশগ্রহণে আয়োজিত এ জুলুসে নেতৃত্ব দেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ)। বিশেষ অতিথি হিসেবে রয়েছেন শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মা.জি.আ) ও সৈয়্যদ মুহাম্মদ মেহমুদ আহমদ শাহ্ (মা.জি.আ)। গত বৃহস্পতিবার থেকেই তারা চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন।
আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উদ্যোগে এবং গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের সার্বিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয় এবারের জুলুস। আয়োজকরা জানিয়েছেন, শরিয়ত সম্মত পরিবেশ বজায় রাখতে ড্রাম সেট বাজানো, নারীর অংশগ্রহণ এবং খাবার নিক্ষেপ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, রাসুল (সা.)-এর শুভাগমনের পনেরশ’ বছর পূর্তি এ বছর। একই সঙ্গে আনজুমান ট্রাস্ট শতবর্ষে পদার্পণ করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম মিলাদ শোভাযাত্রা হিসেবে খ্যাত এ জুলুস এখন চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও মানবিক কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বলেন, ১৯৭৪ সালের ১২ রবিউল আউয়াল থেকে চট্টগ্রামে প্রথম জশনে জুলুসের সূচনা হয়। গাউসে জামান আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহের (রহ.) দিকনির্দেশনায় বলুয়ারদীঘি পাড় খানকাহ শরিফ থেকে আনজুমান সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে এসে শেষ হয়েছিল প্রথম আয়োজন।
Leave a Reply