নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের পেরুলী ( ৬, ৭, ৮, ৯) নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার শিউলি বেগম(৫৫) ও তার মেয়ে মৌসুমি খাতুনের উপর চাঁদার দাবীতে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মহিলা মেম্বার শিউলী বেগমকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় শিউলী বেগমের স্বামী মোঃ মহসিন আলী (৬৪) বাদী হয়ে
নড়াইল সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
নড়াইল সদর হাসপাতালে গিয়ে শিউলী বেগমের মেয়ে মৌসুমি খাতুন(২৯) এর সাথে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মা ২০০৩ সাল থেকে তুলারামপুর ইউনিয়নের (৬,৭,৮,৯) নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, তার জনপ্রিয়তার কারনে সে বার- বার নির্বাচিত হয়েছেন।
আমাদের কোন ভাই নেই, আমরা দুই বোন,আমি ছোট, আমার স্বামী চাকুরী সূত্রে বাইরে থাকে,বয়স্ক বাবা মার দেখা শোনার জন্য আমি তাদের সাথে থাকি, সম্প্রতি আমি পেরুলী আমার পিতার জমিতে বাড়ির কাজে হাত দেই।
জমি মেপে চার পাশে পিলার দেওয়ার জন্য গত ২৬ শে সেপ্টেম্বর (শুক্রবার ) স্থানীয় আমিন মোফাক্কুর তরফদার কে দিয়ে জমি মেপে পিলার বসাই, এসময় আমাদের জমির পাশ্ববর্তী মালিক নুরুল মোল্লা, পিটু মৌলভী, সোবহান, ইসমাইল, টিটব,লিয়াকত,জহুর মাস্টার,ওয়াহিদ সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিল, সীমানা নির্ধারন নিয়ে
কারো কোন আপত্তি ছিলনা।
২৭ সেপ্টেম্বর (শনিবার) রাতে (01716851637) নম্বর থেকে ফোন দিয়ে মৃত সলেমান মোল্যার ছেলে হাফিজুর রহমান(৬৫) পরিচয় দিয়ে আমাদের পিলার বসানোর কাজ বন্ধ করতে বলে,কাজ বন্ধ না করলে ভালো হবে না বলে হুমকি দেয়।অথচ হাফিজুর রহমান আমাদের প্রতিবেশী বা আমাদের জমির পাশ্ববর্তী কেউ না।
২৮ সেপ্টেম্বর (রবিবার) সকাল পৌনে আটটার দিকে লেবাররা আরো পিলার বসানোর কাজ করতে আসলে হাফিজুর রহমানের নির্দেশে তার পোষা সন্ত্রাসী বাহিনী পেরুলী গ্রামের মনিরুল ইসলাম (৪৫),পিতা -আতিয়ার রহমান,শাহাবুল মোল্যা(৪৩), মাহাবুল মোল্লা(৪২)
উভয় পিতা- পিতা-ফসিয়ার মোল্লা,
হাবিবুর রহমান(৪৪), পিতা মৃত হোসেন মোল্লা, সাহেব আলী (৪৫) পিতা - তহিদ মোল্যা, মিজানুর রহমান(৬৪) এসে কাজ বন্ধ করতে বলে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে।
কাজ করতে হলে দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দিয়ে কাজ করতে হবে বলে জানায়৷
আমরা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাঁরা আমাদের বসানো দুইটা পিলার ভেঙে ফেলে।আমি তাদের এই সন্ত্রাসী কাজ কর্ম মোবাইল ফোনে রেকর্ড করতে থাকলে মনিরুল এসে প্রথমে আমার মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে,মোবাইল কেড়ে নিতে না পেরে আমার ওড়না সহ টান দিয়ে আমার গলায় থাকা দুই ভড়ি ওজনের একটি সোনার চেইন ছিনিয়ে নেয়।
এসময় আমার মা আমাকে বাঁচাতে আসলে মনিরুল ও মাহাবুল আমার মাকে বেধরক মারধর করে।
আমার মা অচেতন হয়ে পরলে তখন তারা চাঁদা না দিয়ে পুনরায় কাজ শুরু করলে খুন জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায়। আমি( ৯৯৯) জরুরী সেবায় ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগীতা চাইলে কিছু সময়ের মধ্যেই সেখানে পুলিশ এসে উপস্থিত হয়, এবং পুলিশের সহায়তায় আমার মাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করি, আমার মা নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে শিউলী বেগমের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে
তিনি শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকায় কথা বলতে পারেন নি।
শিউলী বেগমের স্বামী মোঃ মহসিন আলী জানান,বাড়ির কাজে হাত দেওয়ার পর থেকেই হাফিজুর ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার কাছে চাঁদা চেয়ে আসছিল, আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে,আমি ২৮ সেপ্টেম্বর রাতেই নড়াইল সদর থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ করেছি,আমি সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলকশাস্তির দাবী জানাই।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে অনেক মানুষের জমির ফসল আনতে হয়। কিন্তু রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুকনো মৌসুমে এই রাস্তার কাজ করবে এলজিইডি। আমাদের কথা, রাস্তার সরকারি জায়গাটা আগে আমরা মেপে বের করে নেই, তারপর শিউলিরা তাদের জমিতে পিলার পুতুক। কিন্তু তা না করে, রাতরাতি পিলার পুতার উদ্দেশ্য তো ভাল না। এতে রাস্তার কাজে বাঁধা পড়তে পারে। তাই আমাদের লোকজন প্রতিবাদ করেছে। এসময় আমার এক ভাতিজা পিলার উঠিয়ে ফেলতেছিল, তখন মোবাইলে ভিডিও করার সময় মৌসুমির ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে । কিন্তু শিউলিদের মারধর করা কিংবা গহনা নিয়ে যাওয়া সহ অন্যান্য সকল অভিযোগ মিথ্যা।
এ ব্যাপারে নড়াইল সদর থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, “আমি বাইরে আছি। অভিযোগ দিয়েছে কি না ডিউটি অফিসার বলতে পারবে।