সাঁথিয়া ( পাবনা) প্রতিনিধিঃ
পাবনার সাঁথিয়ার বনগ্রাম জনতা ব্যাংকের গ্রাহকদের ৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ম্যানেজার হেমায়েত করিমকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ। ব্যাংক ম্যানেজারের আটকের খবরে আজ রবিবার ব্যাংকে গ্রাহকদের উপচে পড়া ভীড়। টাকা খোয়া যাওয়ায় ব্যাংকে গ্রাহকদের আর্তনাদের রোল পড়েছে।
জানাযায়, গত বুধবার (১৫ অক্টোবর) বনগ্রামের ব্যবসায়ী উপজেলার সাগরদারী গ্রামের সালাম ব্যাপারী জনতা ব্যাংক বনগ্রাম বাজার শাখায় টাকা তুলতে যান। তার হিসাবে টাকা নেই বলে ব্যাংক হিসাব রক্ষক জানালে তুলকামাল কান্ড ঘটে। এঘটনায় সালাম ডাক চিৎকারে আশপাশের ব্যবসায়ী গ্রাহকরা ব্যাংকে জড়ো হয়ে তাদের হিসাব নম্বর চেক করলে দেখাযায় প্রায় গ্রাহকেরই জমা রাখা টাকা কম। বিষয়টি জেলা অফিসকে জানালে তারা এসে ঘটনার সত্যতা পায়। এ নিয়ে রাত ভর যাচাই বাছাই করে অভিযুক্ত হেমায়েত করিমকে পুলিশ হেফাজতে দেয়া হয়। ১৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার ) নতুন ব্যবস্থাপক ফরিদুজ্জামানকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
ঐ দিনই ফরিদুজ্জামান বাদী হয়ে আতাইকুলা থানায় পূর্বের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। আতাইকুলা থানার ওসি সৈয়দ মোহাম্মদ আলমগীর হোসের জানান,অভিযোগের ভিত্তিতে ১৫৪ ধারায় মামলা রুজু করে বৃহস্পতিবারে অভিযুক্তকে পাবনা আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে বনগ্রাম বাজার জনতা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক আটকের ঘটনার সংবাদ জানা জানি হলে গ্রাহকদের রবিবার সকাল থেকে ব্যাংককে ভীড় দেখা গেছে। সকলেই তাদের নিজ নামীয় হিসাবে রাখা টাকা চেক করছে। বনগ্রামের ব্যবসায়ী তনয় ভ্যারাইটিস দোকানের মালিক তনয় সাহা জানান, তার সিসি লোনের ৪৯ লক্ষ টাকা হিসাব থেকে উধাও হয়েছে।
তিনি আরও জানান, টাকা হিসাব থেকে তুলে নেবার পূর্বে মোবাইলের ম্যাসেজ অবশন বন্ধ করে দেয়া হয়।
সাগরদারি গ্রামের সালাম ব্যাপারী জানান, আমি গরুর ব্যবসা করি। ব্যবসার সব টাকা জনতা ব্যাংক বনগ্রাম শাখায় রেখেছিলাম।
বুধবার দুপুরে ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করতে গেলে দেখি আমার হিসাব থেকে ৪১ লক্ষ টাকা নেই। তিনি টাকার শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। খালইভড়া গ্রামের শাপলা খাতুনের ১৬ লক্ষ টাকার জমা রশিদ দিলেও ওই টাকা হিসাব নম্বরে জমা হয়নি। ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুনসুর আলম পিন্চুর হিসাব থেকে ১০ লক্ষ টাকা ঊধায় হয়ে গেছে। বনগ্রামের আ: মতিনের ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, রাজাপুর গ্রামের হযরত আলীর ১ লক্ষ ৫০ হাজার, বহল বাড়ীয়ার আবু জাফরের ৫ লক্ষ টাকাসহ বিভিন্ন গ্রাহকের টাকা বিভিন্ন উপায়ে আত্মসাত করেছে।
বনগ্রাম জনতা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ফরিদুজ্জামান বলেন , গ্রাহকদের থেকে অভিযোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জনতা ব্যাংক পাবনা শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মুন্জুরুল ইসলাম জানান, বিভাগীয় কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন এবং ঢাকা হেড অফিস থেকে কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে আসল ঘটনা জানা যাবে। অভিযুক্ত ম্যানেজার বর্তমানে জেল হাজতে আছেন।
Leave a Reply