সোহেল রানা,রাজশাহী,প্রতিনিধি:
রাজশাহী চারঘাটে তিন ফসলি জমিতে অপরিকল্পিত ভাবে একের পর এক পুকুর খনন, অবৈধ ভাবে খাল দখল ও কালভার্টের মুখ বন্ধের কারণে ফসলি জমি গুলো আজ পানির নিচে ডুবে আছে। অনেক এলাকার বসত বাড়িতেও জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। কৃষকেরা নালা কেটে বিলের পানি সরানোর চেষ্টা করছেন। তা খুব একটা কাজে আসছে না। ফলে আমন চাষে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন উপজেলার কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, চরম বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারনে উপজেলার প্রায় ৩৮০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়নি। আমন চাষের জমিতে এখনও জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত রয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরশন করাখুবই কঠিন।
কৃষকের অভিযোগ অপরিকল্পিত পুকুর খননের কারনে ও ধারাবাহিক ভাবে বৃষ্টিতে জমিতে জমে থাকা পানি সরে যাওয়ার তেমন কোনো লক্ষন নেই। অপরিকল্পিত পুকুর খনন ও খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় পাঁচ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি বছর এই পরিমাণ জমিতেই আম চাষ হয়। আমন চাষের সঙ্গে প্রায় ৩৮ হাজার কৃষক জড়িত রয়েছেন।
সরেজমিন চারঘাটের ভাটপাড়া,শলুয়া, বালিয়াডাঙা, সাদীপুর, কৈ ডাঙা, বালুদিয়াড়সহ আমন চাষের বিলগুলোতে দেখা গেছে থই থই পানি। অপরিকল্পিতভাবে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। পুকুর পাড় উঁচু করে লাগানো হয়েছে কলাসহ বিভিন্ন জাতের গাছ। এতে পানি চলাচল করতে পারছে না। বিলের পানি নেমে যাওয়ার সমস্ত পথ বন্ধ করা হয়েছে। ফলে এসব জমিতে ফসল চাষ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় পুকুরের সংখ্যা ৩ হাজার ৪০২টি। ছয় বছর আগে এ সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭৬২টি। এক যুগ আগে ছিল ১ হাজার ৯৩০টি পুকুর। এসব পুকুরের অধিকাংশই অবৈধভাবে খনন হয়েছে তিন ফসলি জমিতে।
উপজেলার পাইটখালী এলাকার কৃষক আবু সাঈদ হিরু বলেন, গত বিগত আওয়ামীলীগ সরকারে প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের অবৈধ ভাবে পুকুর খননের কাছে জিম্মি ছিলো এলাকার কৃষকরা। জমির মালিকদের কাছে থেকে লিজ নিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর দিয়ে একের পর এক অবৈধ পুকুর খনন করা হলেও কৃষকের কথা চিন্তা করেনি কেউ। ফলে আজ তিন ফসলি জমিতে জমে থাকা পানি বের হতে পারছেন না। দেখা দিয়ে চরম জলাবদ্ধতা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসান বলেন, ৬৮০ হেক্টর জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। প্রায় ৩৮০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়নি। চরম বৃষ্টি ও অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খননের ফলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও নেই।