মোহাম্মদ মাসুদ
চট্টগ্রামের মেয়র হবার পর থেকে নানা বিষয়ে আলোচিত মেয়র শাহাদাত হোসেন। গৃহকর জালিয়াতির তদন্তে অবহেলা নানা ইস্যুতে মেয়রের সঙ্গে বিরোধের জেরে বদলির চিঠির ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম সিটি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে।
১৭ নভেম্বর, সোমবার এ–সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে আগামী ২৩ নভেম্বর তারিখের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল (চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন) থেকে অবমুক্ত হয়ে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। অন্যথায় তিনি ওই তারিখ অপরাহ্ণে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার। এ নিয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে সিটি করপোরেশন থেকে বদলি করার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন মেয়র শাহাদাত হোসেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব জেতী প্রু সই করা অফিস আদেশে বলা হয়েছে, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে। তাঁকে ২৩ নভেম্বরের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হয়ে বদলি হওয়া কর্মস্থলে যোগ দিতে হবে। না হয় ওই দিন থেকে তিনি তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হিসেবে গণ্য হবেন।
উল্লেখ্য, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উচ্চতর প্রশিক্ষণ শেষে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার জন্য গত ২২ অক্টোবর পত্র দিলেও তা গ্রহণ করেননি মেয়র। উল্টো গৃহকর জালিয়াতির তদন্তে অবহেলার চজন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। তাঁকে অপসারণের দাবিতে মিছিল-সমাবেশ করেছেন একদল শ্রমিক-কর্মচারী।
এর আগে শেখ মুহাম্মদ তৌহিদের বিরুদ্ধে কমিশন বাণিজ্য, অবৈধ সম্পদ অর্জন, ক্ষমতার অপব্যবহার, চট্টগ্রামের উন্নয়নে বাধা দেওয়াসহ বেশি কয়েকটি অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগে তার অপসারণের দাবিতে গত ৩০ অক্টোবর সিটি করপোরেশনের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে প্রায় ৪ ঘণ্টা পর মেয়রের আশ্বাসে তারা ফটকের গেট খুলে দেন।
এছাড়া ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের টেন্ডার ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ফাইলগুলো স্বাক্ষর না করে দীর্ঘদিন নিজ দপ্তরে আটকে রাখেন’ এ অভিযোগ তুলে প্রধান নির্বাহীকে বদলি করার জন্য সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে পৃথক দুটি পত্র দেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সর্বশেষ মেয়র ও প্রধান নির্বাহীর দেওয়া পত্রগুলোর বিষয়ে তদন্ত করার জন্য গত সপ্তাহে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।