সোহেল রানা,রাজশাহী,প্রতিনিধি:
রাজশাহীসহ বরেন্দ্র অঞ্চল জুড়ে চলছে আমনের ভরা মৌসুম। পাকা ধানে ভরপুর হয়ে উঠেছে পুরো মাঠ। অগ্রাহণ মাস না পড়তেই বরেন্দ্র অঞ্চলে জুড়ে আমন কাটা-মাড়ার মহোৎসব শুরু হয়েছে। কৃষিশ্রমিকরা এখন সোনালী ফসল ঘরে তোলা নিয়ে দিন-রাত মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
প্রতিকূল আবহাওয়া থাকায় অন্য সব বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে মাঠে মাঠে আমন ধানের মাথা ভালো রয়েছে। ফলে এবার আমনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। তবে বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে শঙ্কায় এখনো রয়েছে কৃষকদের মধ্যে।
যদিও এর মধ্যে সরকারকারিভাবে আমন ধানের দাম এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করেনি। চলতি মৌসুমে বাজারে আমন ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ দাম চলছে ১১০০ করে। যা গত বছর মৌসুমের শুরুতেই দাম ছিল প্রতি মণ ১২৫০ থেকে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত। ফলে এ বছর মণ প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কম পাচ্ছে।
বরেন্দ্র কৃষকরা জানান, চলতি বোরো মৌসুমে সরকার একই দাম নির্ধারণ করলেও কৃষকরা সে সুফল একেবারে পাইনি। ধানের বাজার পুরোটাই চলে গিয়েছিল সিন্ডিকের দখলে। যার কারণে বোরো ধান বিক্রি করে কৃষকদের উৎপাদন খরচই তুলতে পারেনি। এবার সে শঙ্কা করছেন কৃষকরা।
চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় আমনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৮৩ হাজার ২২৪ হেক্টর জমিতে। এ ছাড়া রাজশাহী অঞ্চলের, রাজশাহী, নওগা, নাটোর ও
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আমন চাষাবাদ হয়েছে আরো ৪ লাখ ৫০ হাজার হেক্টরের ওপরে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা পাকড়ি ইউপির মোর্তুজাপুর গ্রামের কৃষক জোনায়েত আলী জানান, চলতি আমন মৌসুমে ১২ বিঘা জমিতে একান্ন জাতের ধান চাষাবাদ করেছেন। ধান কাটা- শুরু করেছেন তিনি। ধানের মাথা ভালো থাকায় এবার বাম্পার ফলনের আশা তার। তবে বর্তমানে বাজারে ধানের ন্যায মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা আছে তার।
তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার পাঁচন্দর গ্রামের কৃষক বুলবুল বলেন চলতি মৌসুমে ৯ বিঘা জমিতে আমন চাষাবাদ করেছেন তিনি। দুই দিন আগে তার ধান কাটা শেষ হয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়া থাকায় তার ক্ষেতে ধান অন্য সব বছরের চেয়ে বেশ ভালো আছে। বাম্পার ফলনও হবে আশা তার। কিন্তু বাজারে ধানের দাম পাওয়া নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তিনিও।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এবার উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ধানকাটা কৃষি শ্রমিকরাও মুজুরি বেশি নিচ্ছে। সারের দাম বেশিসহ কীটনাশক খরচ বেশি হয়েছে। তাই বর্তমানে বাজারে যে দাম চলছে তাতে লোকসান হবে। তাই যত দ্রুত সময় সরকারিভাবে কৃষকের উৎপাদন খরচ নির্ধারণ করে দাম নির্ধারণ করার দাবি কৃষকের।
রাজশাহীর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিন বলেন, আবহাওয়া অনকূলে থাকায় এবার বরেন্দ্র অঞ্চলে আমন ধানের মাথা ভালোই আছে। বাম্পার ফলন হবেআশা করা হচ্ছে।
সোনালি ফসল ঘরে তুলতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষিশ্রমিকরা