1. emon@frilix.com : Emon Hasan : Emon Hasan
  2. editormrahman80@gmail.com : Mizanur Rahman : Mizanur Rahman
  3. info@www.janatarkatha24.com : admin :
  4. wpapitest@config.com : wpapitest :
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
বাগমারায় ৯৫ কোটি টাকা হাতিয়ে ১৮ সমিতি উধাও ৬১ কোটি টাকার ভবন কার দখলে? স্কুল বনাম জুলাই সংগ্রহশালা আরডিএ কমপ্লেক্স ঘিরে নতুন টানাপোড়েন রাজশাহী মেডিকেলে নতুন পরিচালক চসিক প্রধান নির্বাহী তৌহিদুল বদলি: মেয়র শাহাদাত’র বিরোধে বদলির চিঠির ইস্যুতে বরেন্দ্রে চলছে আমন কাটা-মাড়াই মহোৎসববাম্পার ফলনের আশা তবুও দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষক চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনায় দায়িত্ব গ্রহণ সাঘাটায় বেড়েছে ছিনতাইকারী ও মাদকাসক্ত অমানুষের প্রভাব নড়াইলে ভিক্ষুকদের মাঝে নগদ অর্থসহ সহায়ক উপকরণ বিতরণ করলো সদর উপজেলা প্রশাসন অস্বাস্থ্যকর ময়লার ডাস্টবিন সরানোর সংবাদ প্রকাশে সাংবাদিককে গালিগালাজ হুমকি রাজশাহী বোর্ডে ফেল থেকে পাস করলেন ৫৩ শিক্ষার্থী
শিরোনাম:
বাগমারায় ৯৫ কোটি টাকা হাতিয়ে ১৮ সমিতি উধাও ৬১ কোটি টাকার ভবন কার দখলে? স্কুল বনাম জুলাই সংগ্রহশালা আরডিএ কমপ্লেক্স ঘিরে নতুন টানাপোড়েন রাজশাহী মেডিকেলে নতুন পরিচালক চসিক প্রধান নির্বাহী তৌহিদুল বদলি: মেয়র শাহাদাত’র বিরোধে বদলির চিঠির ইস্যুতে বরেন্দ্রে চলছে আমন কাটা-মাড়াই মহোৎসববাম্পার ফলনের আশা তবুও দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষক চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনায় দায়িত্ব গ্রহণ সাঘাটায় বেড়েছে ছিনতাইকারী ও মাদকাসক্ত অমানুষের প্রভাব নড়াইলে ভিক্ষুকদের মাঝে নগদ অর্থসহ সহায়ক উপকরণ বিতরণ করলো সদর উপজেলা প্রশাসন অস্বাস্থ্যকর ময়লার ডাস্টবিন সরানোর সংবাদ প্রকাশে সাংবাদিককে গালিগালাজ হুমকি রাজশাহী বোর্ডে ফেল থেকে পাস করলেন ৫৩ শিক্ষার্থী

বাগমারায় ৯৫ কোটি টাকা হাতিয়ে ১৮ সমিতি উধাও

রিপোটারের নাম
  • প্রকাশিত : বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

 

সোহেল রানা,রাজশাহী,প্রতিনিধি :

রাজশাহীর বাগমারায় সঞ্চয়কারীদের রক্ত-ঘাম ঝরানো টাকার ওপর গড়ে ওঠা সমিতি- ‘উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ’ শেষ পর্যন্ত পরিণত হলো দুঃস্বপ্নে। উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমানত সংগ্রহের পর একে একে উধাও হয়ে গেছে উপজেলার ১৮টি সমিতি। প্রায় ২ হাজার ৩০০ গ্রাহকের সঞ্চয়ের ৯৫ কোটি টাকা হাতিয়ে তারা গা-ঢাকা দিয়েছে।

একডালা গ্রামের খোদেজা বেগম- বছরের পর বছর মানুষের বাসায় কাজ করে আর হাঁস-মুরগি লালন করে চার লাখ টাকা জমিয়েছিলেন। বার্ধক্যে একটি পাকা ঘর করার স্বপ্ন ছিল তাঁর। সমিতির প্রলোভনে সেই টাকাই জমা রেখে আজ নিঃস্ব। “মেয়াদ শেষে টাকা দ্বিগুণ হবে” -এমন আশ্বাস দেওয়া লোকজন আজ নেই, বন্ধ হয়ে গেছে সাইনবোর্ড ঝুলে থাকা অফিসগুলোও।

শুধু খোদেজা নন, একই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন শাহানাজ নামের আরও এক নারী। তিনি ও তাঁর স্বজনেরা সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতিতে রেখেছিলেন ৩৩ লাখ টাকা; তার মধ্যে এক স্বজনের অবসরের টাকাও ছিল। কথামতো একসময় মুনাফা মিললেও এখন সব বন্ধ। থানায় অভিযোগ করেও লাভ হয়নি।

সমবায় দপ্তরের তথ্য বলছে, বাগমারায় মোট ৩০৩টি সমিতির নিবন্ধন দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগের পর দুই দফায় ৬৮টি সমিতির অনুমোদন বাতিল হয়েছে। প্রায় ১০০টি সমিতি এখন কালো তালিকায়। ২০১৮ সালের পর নিবন্ধন সহজ হওয়ায় সুযোগ নেয় একটি প্রভাবশালী চক্র। পাইলট প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে যেসব সমিতি নিবন্ধন পেয়েছিল, অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর দু’বছরেই সেই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়।

ভুক্তভোগীরা জানান, প্রথমে মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক আকর্ষণীয় মুনাফা দিয়ে গ্রাহক টানত এসব সমিতি। কেউ প্রতিশ্রুতি দিত পাঁচ বছরে দ্বিগুণ মুনাফার, কেউ বছরে প্রতি লাখে ২০ হাজার টাকা। কৃষক, শিক্ষক, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী, শ্রমিক -সব শ্রেণির মানুষ তাঁদের সারা জীবনের সঞ্চয় এসব সমিতিতে আমানত হিসাবে রাখেন। কেউ ২৮ লাখ, কেউ ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানত সংগ্র করে সমিতিগুলো লাপাত্তা হয়ে গেছে।

গ্রাহকদের ভাষ্য, চলতি বছর থেকেই শুরু হয় টালবাহানা। একসময় নিয়মিত মুনাফা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর একে একে ১৮টি সমিতির পরিচালকরা টাকা নিয়ে উধাও। সাইনবোর্ড আছে, অফিস নেই; আছে শুধু তালাবদ্ধ কক্ষ আর শূন্যতার দীর্ঘশ্বাস।

উধাও হওয়া সমিতিগুলোর মধ্যে রয়েছে-

আত তিজারা, আলোর বাংলা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমিতি, আল-বায়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড, তোরা ফাউন্ডেশন, মোহনা সমাজকল্যাণ সংস্থা, স্বচ্ছতা গ্রাম উন্নয়ন সমিতি, আঁত তাবারা শিক্ষক কল্যাণ সমিতি, আল আকসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমিতি, আমেনা ফাউন্ডেশন, নদী সঞ্চয় ঋণদান সমিতি, চানপাড়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা, সাফল্য গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা, সোনালী সকাল ঋণদান সমিতি, সালেমা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমিতি, ম্যাসেঞ্জার সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতি, জনপ্রিয় সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতি, গোল্ডেন স্টার সমিতি, অগ্রণী সমবায় সমিতি ও স্বনির্ভর সঞ্চয় সমিতি।

আলোর বাংলা সমিতির গ্রাহক কমিটির সভাপতি মজনুর রহমান জানান, শুধু এই একটি সমিতির তিন শাখা থেকেই ৪৫০ গ্রাহকের ২৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন পরিচালকরা।

অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা বীরেন্দ্রনাথ সরকার বলেছেন, তিনি ৯ লাখ টাকা রেখেছিলেন মোহনা নামের সমিতিতে। টাকা ফেরত না পেয়ে ২০ গ্রাহক মিলে মামলা করেছেন। পরিচালক মুরাদ হোসেন গ্রেপ্তার হলেও জামিনে বের হয়ে পরে পালিয়ে যান।

ভবানীগঞ্জের মাহাবুর রহমানসহ ৭০ গ্রাহক আল-বায়া সমিতিতে রেখেছিলেন প্রায় ৪ কোটি টাকা। মামলা করার পর দুই পরিচালক গ্রেপ্তার হলেও বাকি টাকাগুলোর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

চার অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী একসঙ্গে জানিয়েছেন, তাঁদের দুই সমিতিতে জমা ৭৬ লাখ টাকা এখন পানসে স্মৃতি। কেউ নেই, কোনো প্রতিশ্রুতিও নেই। একই অভিজ্ঞতা দলিল লেখক রইচ উদ্দিনের- তিনি জানান, আঁত তাবারা সমিতির পরিচালক প্রায় ২৮ কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে পালিয়েছেন।

এক কলেজশিক্ষক বলেন, তিনি ২০ লাখ টাকা রেখে মাসে মুনাফা পেতেন। সাত মাস ধরে মুনাফা বন্ধ। পরিচালকেরা পুরো অফিস গুটিয়ে উধাও। “লোভে পড়ে জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে আজ নিঃস্ব,” -বললেন তিনি।

পালিয়ে থাকা কয়েক পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেও স্বস্তি মেলেনি। তাঁরা স্বীকার করেছেন গ্রাহকের টাকা তাঁদের কাছেই আছে এবং ব্যবসায় লোকসানের অজুহাত দিয়ে সময় চাইছেন। আলোর বাংলা ফাউন্ডেশনের আজিজুল হক বলেন, “মাঠে কিছু টাকা আছে, একটু সময় পেলে ফেরত দেব।” মুরাদ হোসেন ও আক্কাছ আলীও একই বক্তব্য দিয়েছেন।

এ ধরনের প্রতারণা ঠেকাতে সমবায় দপ্তরের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠায় উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা কাউসার আলী বলেন, সমিতির বার্ষিক প্রতিবেদন তাদের প্রদত্ত তথ্যের ওপরই তৈরি হয়। অনেক সমিতি একাধিক সংস্থা থেকে অনুমতি নিয়ে আমানত সংগ্রহ করেছিল- যা নজরদারির বাইরে রয়ে যায়।

বাগমারা থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম জানান, কয়েকটি মামলায় ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে কিছু পরিচালক। নতুন নতুন অভিযোগ প্রতিদিনই আসছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম বলেন, “এসব সমিতি সমবায় নীতিমালা মানেনি। আইনগত প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

মানুষের শেষ সম্বল লুট করে পালিয়ে যাওয়া প্রতারণা চক্র ধরা পড়বে কি না -প্রশ্ন এখন কেবল সময়ের। গ্রাহকেরা ফিরে পাবে কি না তাঁদের সঞ্চয় -তা নিয়েও ঘনিয়ে আছে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
Copyright © 2024 Frilix Group
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD