মোঃ জুলহাস উদ্দিন হিরো, শেরপুর প্রতিনিধি,
জাল দলিলের খপ্পড়ে পড়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন হতদরিদ্র কয়েকটি পরিবার। এমন অভিযোগে আদালতে মামলা করেও হয়রানীর শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। সম্প্রতি একের পর এক জমি জবর দখলের বিষয়টি নিয়ে এলাকাতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এমন অভিযোগ করেছেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার হলদি গ্রামের আজিজুর রহমান (৫০), মৃত আব্দুল আলীর ছেলে শামসুদ্দিন খোকন, মৃত লাল মিয়ার ছেলে আমিনুল ইসলাম, জবর দখলকারী আব্দুল বাতেনের স্ত্রীর বড় দুই বোন জয়গণ বেগম, শারমিন বেগম, শ্বাশুরী সখিনা খাতুন (৯০) ও আনোয়ার হোসেন। ঘটনাটি সরজমিনে তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী ভুক্তভোগী পরিবারসহ এলাকাবাসীর।
জানা গেছে, ঝিনাইগাতী উপজেলার হলদি গ্রাম মৌজায় বিআরএস রেকর্ড মূলে ২৪০ খতিয়ানের আরওআর ২০৩, বিআরএস ৬১০, ৬১১, ৬১৩, ৬১৪, ৬১৫, ৬১৬, ৬১৭, ৬১৮ নং দাগে ২ একর ৬ শতাংশ জমি। এর মধ্যে অভিযোগ ওঠে ১ একর ৩ শতাংশ জমির। এই জমি জাল দলিল সৃষ্টি করে জবর দখল করেছেন মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে শেরপুরের এক চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এর গাড়ী চালক আব্দুল বাতেন। যার দলিল নং ১৪৭৪। দলিল সম্পাদনের তারিখ ২০/০২/১৯৬২ ইং। শুধু তাই নয় আব্দুল বাতেন এর পার্শ্ববর্তী সরকারিভাবে আবাসন প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত ১ নং খাস খতিয়ানের ৫০ শতাংশ জমি। এটি জাল দলিল সৃষ্টির মাধ্যমে আদালতে মামলা দায়ের করে জবর দখল করেছেন। এতে আটকে যায় হতদরিদ্রদের জন্যে নির্ধারিত জমিতে গৃহনির্মাণ। যার দলিল নং ৬৪ (০৭-০১-১৯৬৪)। মামলা নং ১৮/২০২১ অন্য প্রকার। অপর মামলা নং ৩৭/ ২০২১। বর্তমানে মামলা দুটি বিচারাধীন। যার আপিল নং ৩৮/ ২০২১।
ভুক্তভোগি শামসুদ্দিন খোকন, জয়গণ বেগম, শারমিনা বেগম, আমিনুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন জানান, ওই জমির ৪০ শতাংশ ছিল জয়গণ বেগম ও শারমিনার বাবার ভোগ দখলে। এমনকি রেকর্ডও তার নামে। অথচ এটিও জাল দলিলের মাধ্যমে জবর দখল করেছেন।
অভিযুক্ত বাতেনের আপন ভায়রা ভুক্তভোগী আজিজুর রহমান (৫০) বলেন, বাতেন আমার শ্বাশুরী, তার স্ত্রীর ২বোনসহ অন্য ব্যাক্তিদের জমি জাল দলিল সৃষ্টি করে দখল করে নিয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় মাতাব্বর, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন অবগত। কিন্তু তাকে বার বার বলেও জবর দখলকৃত জমি উদ্ধার করতে পারেনি। এ জন্য আমরা আদালতের দ্বারে-দ্বারে ঘুরছি। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দ্রুত এর বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে আব্দুল বাতেন সাংবাদিকদের বলেন, এটি আমার ক্রয়কৃত জমি। তাছাড়া এ ব্যাপারে আদালতে মামলা আছে। আদালত যে রায় দিবে তা মাথা পেতে নিবো। কতিপয় ব্যাক্তি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারনা চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা রেজিস্ট্রার মো. হেলাল উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন , প্রাথমিকভাবে ধারনা করা যায়, দলিলের অনুলিপি জাল। কোন চক্র হয়তবা এই নকল কিংবা ভূয়া দলিল তৈরি করতে পারে। তবে এ ব্যাপারে তদন্ত না করে কিছুই বলা যাবে না। তিনি আরো বলেন, আমরা এমন চক্রকে ধরার জন্য সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি। রেকর্ডরুম নজরদারিতে রেখেছি । কেউ এমন কাজ করলে তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
সংবাদদাতা, মোঃ জুলহাস উদ্দিন হিরো,
শেরপুর প্রতিনিধি,
Leave a Reply