বেরোবি প্রতিনিধি:
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) দীর্ঘ এক যুগ পর প্রায় ৩০০ কর্মচারীর পদোন্নতির অচলাবস্থার অবসান হতে যাচ্ছে। গত ২৮ জুন অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১৩তম সিন্ডিকেট সভায় এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলীর উদ্যোগে এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেওয়ায় কর্মচারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নিয়মিত পদোন্নতি হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। পূর্ববর্তী তিনটি প্রশাসনের বিরুদ্ধে আপগ্রেডেশন নীতিমালা পরিবর্তনের অজুহাতে কর্মচারীদের পদোন্নতি আটকে রাখার অভিযোগ ছিল। ফলে অধ্যাপক ড. একেএম নুরুন্নবী, অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ এবং অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদের সময়ে কর্মচারীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছিল।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ইতিবাচক পরিবর্তন আনেন। এরই ধারাবাহিকতায়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় কর্মচারীদের পদোন্নতির বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে তা সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। পদোন্নতির জন্য আবেদনকারী ৩২০ জন কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ৩০০ জনের আপগ্রেডেশন হবে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আপগ্রেডেশন নীতিমালার অজুহাতে কর্মচারীদের তাদের ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। পূর্ববর্তী উপাচার্যদের আমলে তাদের আশপাশের কিছু ব্যক্তির কারণে এই অন্যায় ঘটেছে। বর্তমান উপাচার্য মহোদয়ের উদ্যোগে অবশেষে তাদের বঞ্চনার অবসান হলো, যা একটি সময়োপযোগী ও ন্যায়সঙ্গত সিদ্ধান্ত।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীরাই সবচেয়ে বেশি শ্রম ও সময় দেন। তাদের বঞ্চিত রাখা একটি হঠকারী সিদ্ধান্ত ছিল। আমরা দুই দিনব্যাপী বোর্ড গঠন করে তাদের প্রাপ্যতা নির্ধারণ করেছি। প্রশাসনের দায়িত্ব হলো সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়া এবং কেউ যেন তার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, তা নিশ্চিত করা।”
এদিকে, প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক আনন্দ ও সন্তোষ বিরাজ করছে। তারা জানান, এই পদোন্নতি তাদের কর্মস্পৃহা বাড়াবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে আরও গতি আনবে। দীর্ঘদিনের বঞ্চনার পর প্রাপ্য সম্মান পাওয়ায় তারা বর্তমান প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
Leave a Reply