
নাটোর প্রতিনিধি:
নিজের হাতে প্রতিমা তৈরি এবং নিজ বাড়িতে মন্ডবের আয়োজন করে নিজেই মন্ত্র বলে দূর্গাপূজা করে আসছেন রাজকুমার সাহা নামে মা দূর্গা ভক্ত এক তরুণ কলেজ শিক্ষার্থী। দূর্গা ভক্ত কলেজ শিক্ষার্থী রাজকুমার সাহা নাটোরের সিংড়া পৌরসভার নিংগইন ঘুন পাড়া মানিক কুমার সাহার ছেলে। সবেমাত্র ডিপ্লোমা পড়াশোনা শেষ করেছেন তিনি।
টানা ৮ বছর ধরে নিজের হাতে তৈরী প্রতিমায় পূজার আয়োজন করায় স্থানীয় সনাতন ধর্মের সাধারণ মানুষের কাছে বেশ সারা ফেলেছে রাজকুমার। তার নিপূণ হাতের ছোঁয়ায় মৃম্ময়ী প্রতিমা ধীরে ধীরে দেবী রূপ ধারণ করে।
রাজকুমার সাহার মা রিক্তা রানী সাহা জানান, আমার একটাই ছেলে। ছোট বেলা থেকে দূর্গা ভক্ত। খেলার স্থলে হঠাৎ করেই তখন স্কুল পড়ুয়া ছেলে ২০১৭ সালে প্রথম দুর্গা প্রতিমা তৈরী করে সবাইকে চমকে দেয়। সে বছরই আমরা প্রথম ঘরোয়া পরিবেশে দুর্গা পুজা শুরু করি। পরের বছর থেকে পাড়া প্রতিবেশীরাও আমার ছেলের মন্ডপে এসে পূজা করা শুরু করেন। সবমিলিয়ে প্রতিবছর ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়। সরকারী অনুদান পাই ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা। বাকি টাকা আমরাই বহন করি।
স্থানীয় বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক রনি সাহা জানান, বয়সে তরুণ হলেও পেশাদার মৃৎশিল্পের মত কাজ করে রাজকুমার।
প্রতি বছর নিজের হাতে বাঁশের কাঠামো তৈরি করে, মাটি সংগ্রহ করে, এক এক করে নির্মাণ করে দুর্গা, কার্তিক, গনেশ, মহিসাসুর ও স্বরস্বতীর প্রতিমা। রং তুলির কাজটিও নিজের হাতে করে সে। কোন ডাইস বা খর্মা ছাড়াই নিজ হাতে প্রতিমাগুলোর মুখমন্ডল তৈরি করেছে, যা অভাবনীয়।
প্রতিমার সৌন্দর্য দেখে যে কেউ বলবে, পেশাদার কোনও মৃৎশিল্পীর কাজ। আমরাও এখানে পূজায় অংশ গ্রহণ করি।
সরেজমিনে নিংগইন ঘুন পাড়া হরিবাড়ি গিয়ে দেখা যায় বাড়ির উঠানে পূজা মন্ডবে পূজা কর্মে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাজকুমার।
রাজকুমার জানান, খুব ছোট বেলা থেকে ইচ্ছে ছিল আমি নিজ হাতে দেবী দুর্গা মাকে বানাবো এবং নিজেই মন্ত্র বলে পূজা করবো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় ও সকলের আশির্বাদে আজ আমি তা করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
সিংড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার সরকার বলেন, উপজেলায় এ বছর ৮৫ টি পূজা মন্ডপের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে নিংগইন ঘুন পাড়া হরি বাড়ি মন্দিরের পূজা মন্ডপ একটি। যা তরুণ যুবক দুর্গা ভক্ত রাজকুমার সাহার নিজ হাতে নির্মাণ করা প্রতিমা। বেশ কয়েক বছর ধরেই রাজকুমার তার পারিবারিক উদ্যোগে এ পূজার আয়োজন করে আসছে। আমি তার মঙ্গল কামনা করছি।
Leave a Reply