নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) সুমন কুমার মন্ডলের নিয়োগ অবৈধ ও তার পরিবার ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাসসহ ভারতীয় নাগরিকত্বের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অফিসসূত্রে জানা যায়,, সরকারী বিধি মোতাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকসহ বিএড থাকলে ও অবৈধভাবে বি,এড ছাড়াই সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়েছেন সুমন কুমার মন্ডল। তার পরিবার স্থায়ীভাবে ভারতে বসবাস করে। তিন বছর আগে তার মেয়ে নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে ও ছেলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেনিতে পড়ত। তারা এখন ভারতে পড়াশোনা করে সুমন কুমার মন্ডল ভারতীয় নাগরিক না হলে সেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে তারা পড়াশোনা করতে পারত না। এ ছাড়া ভারতের যাওয়ার জন্য কতৃপক্ষের ভুয়া অনুমতিপত্র তৈরি করে অবৈধভাবে ২০২৪ সালের জুলাই, অক্টোবর ও ডিসেম্বর মাসে দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থান করেছিলেন। সুমন কুমার মন্ডলের শিক্ষাগত যোগ্যতা, সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি, নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফলসহ তথ্য নিতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর তারিখে সুমন কুমার মন্ডলের কাছে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করলে পরে দেবেন বলে জানান। কয়েকদিন পরে তথ্য চাইলে তিনি তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।
ইতিপূর্বে এই আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ শিক্ষক অনেকবার দূর্নীতি করে মৌখিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। ছাত্রদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করে স্কুলের মধ্যে শারীরিকভাবে লাঞ্জিত হয়েছেন। অত্র বিদ্যালয়ের বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এস সি প্রোগ্রামের বোর্ড পরীক্ষায় কেন্দ্রে প্রবাসী ছাত্রের পরীক্ষার খাতা নিজে লিখে দেওয়ার সময় ধরা পড়ে পা জড়িয়ে ধরে নাকে খত দিয়ে নিজে পার পেলেও কেন্দ্রটি বাতিল হয়ে যায়।কৃষি শিক্ষা ব্যবহারিক পরীক্ষায় ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা আদায়, অফিসের কথা বলে ব্লাকমেইল করে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়াসহ নানা ধরনের দুর্নীতির জন্য শেষ বারের মতো ক্ষমা চেয়ে আত্মস্বীকৃত দূর্নীতির মুচলেকা দেন।
বিগত কমিটির ্এক অভিবাবক সদস্য বলেন, ভিসি স্কুলে নিয়ম নীতি বলে কিছু আছে বলে আমার জানা নেই। সহকারী প্রধান শিক্ষক সুমন কুমার মন্ডলের দূনীতিরও কোন শেষ নেই। ২০২৩ সালের আগষ্ঠ মাসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়ে হয়ে উঠেছেন আরো বেপরোয়া। তদন্তে দূনীতির প্রমানিত হওয়ায় কারনে প্রধান শিক্ষক পদে অযোগ্য ঘোষনা করা হয়।কমিটির কাছে তদন্ত প্রতিবেদন গোপন করে সাজানো পরীক্ষার মাধ্যমে ২০২৩ সালের ২ আগষ্ট ও ২০২৪ সালের ৪ জানুয়ারী দুইবার প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে ব্যর্থ হন। ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখতে ইচ্ছাকৃতভাবে নিয়মিত কমিটি না করে সাবেক হুইপ ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার ভূয়া ডিও লেটারে এডহক কমিটি বানিয়েছিলেন।
স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুমন কুমার মন্ডলের নিয়োগসহ যাবতীয় দুনীতির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি। ২০২৩ সালে গোপনে দাতা সদস্য নেওয়া, ক্যাশ বইয়ের পাতা ছিড়ে ফেলার চেষ্টা, ভূয়া বিল ভাউচার, অহরহ মিথ্যা কথা বলা এমনকি কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে ব্লাকমেইলসহ তার দূনীতির ফিরিস্তি বলে শেষ করা যাবে না। আর প্রশাসনিক কাজে একের পর এক ব্যর্থতায় স্কুলের অবস্থা করুন। বর্তমান সভাপতি অত্যান্ত সৎ ,শিক্ষাবান্ধব হওয়ায় কয়েকমাস ভূয়া বিল ভাউচার বন্ধসহ স্কুলের নানা ধরনের উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল কিন্ত কমিটির বিষয়ে নতুন প্রজ্ঞাপনে স্কুলের ভবিষ্যত উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকবে কি না জানি না।
স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের সময় সুমন স্যার জোর করে প্রাইভেট পড়াত ও উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করার কারনে শারিরিকভাবে লাঞ্জিত হয়েছিলেন।
স্কুলের বর্তমান শিক্ষার্থীরা জানান, সুমন স্যার গাছের আম ও কাঠাল পেড়ে রুমে দিয়ে আসতে বলত।একদিন স্যারকে না দিয়ে আম পাড়ার কারনে দাবড়ায়ে মাঠের ভিতর নিয়ে যায়। এ বছরও গরমের ছুটির মধ্যে বেল পেড়ে বাজারে বিক্রি করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুমন কুমার মন্ডলের সাথে কথা বলে অভীযোগের বিষয়ে জানাবো।
Leave a Reply