
মোঃ জুলহাস উদ্দিন হিরো, শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুর – ৩ (শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী) আসনে আসন্ন জাতীয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ত্রিমুখি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এ নির্বাচনে, ৩ জনপ্রার্থী অংশ গ্রহনের উদ্দেশ্যে প্রচার প্রচারনাসহ জনসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসব প্রার্থীরা হলেন, বিএনপির সাবেক ৩ বারের সংসদ সদস্য বিএনপির মনোনিত প্রার্থী ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দারিপাল্লা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি নুরুজ্জামান বাদল। এ দুই প্রার্থীর বাড়ি শ্রীবরদী উপজেলায়। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছেন ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরের বাসিন্দা ৩ বারের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও ৩ বারের উপজেলা পরিষদের সফল চেয়ারম্যান জেলা বিএনপির সাবেক দুই বারের যুগ্ন আহবায়ক ও ঝিনাইগাতী উপজেলা বিএনপির দুই বারের সাধারণ সম্পাদক জননেতা আমিনুল ইসলাম বাদশা। উল্লেখ্য, বিএনপি প্রার্থী মাহমুদুল হক রুবেলের পরিবার থেকে ৬ বার এমপি প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে শাসন করেছেন। তন্মধ্যে মাহমুদুল হক রুবেলের বাবা ডাঃ সেরাজুল হক ১৯৯০ সালে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়ে ৩ বছর শাসন করেছেন। পরে মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মৃত্যুবরন করেন।
এসময় উপ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন দেয় মরহুম ডাঃ সেরাজুল হকের ভাতিজা হেদায়েতুল ইসলামকে। এ নির্বাচনে মরহুম ডাঃ সেরাজুল হকের ছেলে মাহমুদুল হক রুবেল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সমপ্রিতি ভোটে মাহমুদুল হক রুবেল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন।
এক পর্যায়ে জেলা বিএনপির দ্বায়িত্ব আসে তার উপর। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাহমুদুল হক রুবেলকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। এ নির্বাচনে মাহমুদুল হক রুবেলকে পরাজিত করে এমএ বারি নৌকা প্রতিক নিয়ে জয়লাভ করেন। ২০০১সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী এমএ বারিকে পরাজিত করে মাহমুদুল হক রুবেল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অপরদিকে জেলা বিএনপির দ্বায়িত্বে থাকায় নিজের ক্ষমতা ধরে রাখতে দলের ক্লিন ইমেজের নেতা কর্মীদের বাদ দিয়ে তার অনুগতদের দিয়ে দলীয় কমিটি গঠন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এসময় মাহমুদুল হক রুবেলের চাচা প্রকৌশলী একে এম ফজলুল হক চান পারিবারিক কারনে বিএনপিতে জায়গাকরে নিতে না পেরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক চাঁন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন পাওয়া ফজলুল হক চাঁনের ভাতিজা মাহমুল হক রুবেলকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন একেএম ফজলুল হক চাঁল। জনশ্রুতি রয়েছে চাচার প্রতি ভাতিজার নমনীয়ভাবের কারনে চাচা ফজলুল হক চান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
পরবর্তীতে টানা তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন একে এম ফজলুল হক চান। এক পরিবার থেকে টানা ৬ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় তাদের প্রতি সংসদীয় আসনের দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও রয়েছে নানা কৌতুহল। এছাড়া ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে মাহমুদুল হক রুবেল জেলা বিএনপির দ্বায়িত্বে থাকার পরেও জেলা বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের তিনি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। দলীয় নেতাকর্মীরা হাট দখল ঘাট দখল, বালু লুটপাট চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের সাথে জরিয়ে পরে। এর দায় এরাতে পারছেন না মাহমুদুল হক রুবেল ও।
ইতিমধ্যেই নির্বাচনে এসব প্রভাব পরতে শুরু করেছে। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামী এসব কোন কর্মকাণ্ডের সাথে জরিত না থাকায় ভোটের মাঠে সমর্থন বেড়েছে তাদের। ( শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী) দুইটি উপজেলার ১৭ টি ইউনিয়ন নিয়ে শেরপুর ৩ আসন। তন্মধ্যে শ্রীবরদী উপজেলায় ১০ ইউনিয়ন ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় ৭টি ইউনিয়ন। শ্রীবরদী উপজেলার ৭ ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫২ হাজার ৬০৫ জন। পুরুষ ভোটার ১লাথ ২৫ হাজার ৭৩৩। নারি ১লাখ ২৫ হাজার ৮৬৬। ঝিনাইগাতী উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ১৬০ হাজার ৭৭৩ জন। তন্মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৯হাজার ৩৩৩ জন। নারী ৮১ হাজার ৪৩৮ জন। উল্লেখ দেশ স্বাধীনের ৫৪ বছরেও ঝিনাইগাতী উপজেলার মাটি থেকে বড় কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়ন দেয়নি। যতবার মনোনয়ন দেয়া হয়েছে শ্রীবরদী থেকেই।
আর এমপিও নির্বাচিত হয়েছে শ্রীরবদী থেকেই। ফলে কাঙ্খিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ঝিনাইদাতী উপজেলা। এমপির সাধ পায়নি তারা । তাই এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল ইসলাম বাদশাকে নিয়ে উপজেলা বাসী ঐক্যবদ্ধ। তারা ৫৪ বছর শ্রীবরদীর মাটিতে ভোট দিয়েছেন। এবার তারা মাটিতেই ভোট দিবেন।





Leave a Reply