নিউজ ডেস্ক :
সরকার ও দলে নজিরবিহীন চাপে পড়ে দলীয় প্রধানের পদ ছাড়তে রাজি হয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে শরৎ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। আজ বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
এই গ্রীষ্মেই কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব বেছে নেওয়া হবে। আর অক্টোবরে দলের সম্মেলনের সময় নতুন প্রধানমন্ত্রী পাওয়া যাবে। তবে দলের কয়েকজন দাবি তুলেছেন, বরিস এখনই যাতে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকেও সরে দাঁড়ান।
ডাউনিং স্ট্রিট থেকে জানানো হয়, আজ দিনের শেষ নাগাদ কনজারভেটিভ পার্টি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন বরিস।
বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা চালান বরিস। তবে দলের পার্লামেন্ট সদস্যদের পদত্যাগ চলতে থাকায় বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়, তাঁকে সরে যেতে হবে এবং সরকার চালানো সম্ভব হবে না।
বিবিসি পলিটিক্যাল এডিটর ক্রিস মেসন সরাসরি সম্প্রচারে জানান, দলীয় প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বরিস। আর এরই মধ্য দিয়ে প্রায় ৪৮ ঘণ্টার নাটকীয়তার অবসান ঘটে।
এর আগে বরিসের সরকারকে ঘিরে কয়েক মাসের নিরবচ্ছিন্ন রাজনৈতিক অস্থিরতা গত মঙ্গলবার ব্যাপক হয়। এ দিন মাত্র ১০ মিনিটের ব্যবধানে অর্থমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করেন।
একজন কনজারভেটিভ পার্লামেন্ট সদস্যের (এমপি) বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী আমলে না নেওয়ায় ঘটনার সূত্রপাত হয়।
এরপর জুনিয়র মন্ত্রী ও এমপিদের পদত্যাগ এবং অনাস্থা জানানোর হিড়িক শুরু হয়। গতকাল বুধবার রীতিমতো পদত্যাগের বন্যা বয়ে যায়। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। ২৪ ঘণ্টায় ৪০ জনের বেশি মন্ত্রী ও সহযোগী পদত্যাগ করেন। আজ সকাল নাগাদ সেটা প্রায় অর্ধশত জনে গিয়ে ঠেকে।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের একটি দল ডাউনিং স্ট্রিটে যান প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগে রাজি করাতে। তবে পদত্যাগ না করার বিষয়ে অনড় থাকেন বরিস। গত নির্বাচনে ভোটারদের ‘বিপুল ম্যান্ডেট’ পাওয়ায় তাঁর পদত্যাগের কোনো ইচ্ছা নেই বলে জানান। পার্লামেন্টের অধিবেশনেও একই ইঙ্গিত দেন তিনি।
কিন্তু আজও মন্ত্রিসভা ও দল থেকে পদত্যাগের ধারা অব্যাহত থাকে। তাঁরা অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর ওপর অনাস্থা জানিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। অব্যাহত চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত নতিস্বীকার করেন বরিস।
তিন বছরেরও কম সময় আগে সাধারণ নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়ে প্রধানমন্ত্রী হন বরিস। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তিনি নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। এর মধ্যে রয়েছে করোনাভাইরাস মহামারিতে আরোপিত লকডাউনের বিধিনিষেধ ভেঙে পার্টি আয়োজন ও জরিমানা প্রদান।
Leave a Reply